একজন তালাকপ্রাপ্ত মুসলিম মহিলা তার প্রাক্তন স্বামীর কাছ থেকে মুসলিম নারীদের তালাকের ক্ষেত্রে অধিকার সুরক্ষা সংক্রান্ত ১৯৮৬ সালের আইন এর মাধ্যমে প্রদত্ত অধিকারের পাশাপাশি ফৌজদারি কার্যবিধির ১২৫ ধারা এর অধীনে তার প্রাক্তন স্বামীর কাছ থেকে ভরণপোষণ পাওয়ার অধিকারী হবেন এবং মুসলিম নারীদের তালাকের ক্ষেত্রে অধিকার সুরক্ষা সংক্রান্ত ১৯৮৬ সালের আইন ধর্মনিরপেক্ষ আইনের উপর প্রাধান্য পাবে না মর্মে ১০ জুলাই ভারতের সুপ্রিম কোর্ট রায় প্রদান করেন।
এই রায়ে বলা হয়, একজন মুসলিম মহিলা ফৌজদারি কার্যবিধি এর ১২৫ ধারা এর অধীনে তার স্বামীর কাছ থেকে ভরণপোষণ পাওয়ার অধিকারী হবেন।
বিচারপতি বি ভি নাগারথনা এবং অগাস্টিন জর্জ মাসিহের একটি বেঞ্চ শাহ বানু রায়ের পরে প্রণীত মুসলিম নারীদের তালাকের ক্ষেত্রে অধিকার সুরক্ষা সংক্রান্ত ১৯৮৬ সালের আইনটি ধর্মনিরপেক্ষ আইনের উপর প্রাধান্য পাবে এই যুক্তি প্রত্যাখ্যান করেন। এছাড়া, মুসলিমদের জন্য ব্যক্তিগত আইন থাকার কারণে ফৌজদারি কার্যবিধি এর ১২৫ ধারার বিধানগুলি প্রযোজ্য নয় এমন একটি আবেদনেও আদালত সম্মত হননি।
এ রায়ে আরো বলা হয়, ফৌজদারি কার্যবিধির এর ১২৫ ধারা মুসলিম বিবাহিত মহিলা সহ সমস্ত বিবাহিত ও অমুসলিম তালাকপ্রাপ্ত মহিলাদের জন্য প্রযোজ্য এবং এই বিধানটি বিশেষ বিবাহ আইনের অধীনে উপলব্ধ প্রতিকার ছাড়াও বিশেষ বিবাহ আইনের অধীনে বিবাহিত এবং তালাকপ্রাপ্ত এই জাতীয় সমস্ত মুসলিম মহিলাদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।
উল্লেখ্য, এম. আহমেদ খান বনাম শাহ বানু মামলার যুগান্তকারী রায়ের পর মুসলিম নারীদের তালাকের ক্ষেত্রে অধিকার সুরক্ষা সংক্রান্ত ১৯৮৬ সালের আইনটি তালাকপ্রাপ্ত মুসলিম মহিলাদের ভরণপোষণের সমস্যা সমাধানের জন্য প্রণীত হয়েছিল। এই আইনের ৩ ধারায় বলা হয়েছে: “মহর বা অন্যান্য তালাকের সময় মুসলিম নারীর সম্পত্তি তাকে দিতে হবে। - (১) আপাতত বলবৎ অন্য কোন আইনে যা কিছুই থাকুক না কেন, একজন তালাকপ্রাপ্তা মহিলার অধিকার থাকবে — (ক) তার পূর্বের স্বামী ইদ্দত সময়ের মধ্যে তাকে একটি যুক্তিসঙ্গত ও ন্যায্য বিধান এবং ভরণপোষণ প্রদান করবে। (খ) যেখানে তিনি বিবাহ বিচ্ছেদের আগে বা পরে তার জন্মগ্রহণকারী সন্তানদের রক্ষণাবেক্ষণ করেন, সেখানে তার প্রাক্তন স্বামীর দ্বারা এই ধরনের সন্তানদের জন্মের তারিখ থেকে দুই বছরের জন্য একটি যুক্তিসঙ্গত এবং ন্যায্য বিধান এবং রক্ষণাবেক্ষণ করা হবে। "
ভারতের সুপ্রিম কোর্টের এই রায়ের মাধ্যমে এখন এই প্রতিকারের পাশাপাশি একজন মুসলিম তালাকপ্রাপ্ত মহিলা ফৌজদারি কার্যবিধির এর ১২৫ ধারার বিধান অনুসারে প্রাক্তন স্বামীর কাছ থেকে ভরণপোষণ পেতে পারেন।
0 coment rios: