সর্বশেষ

১৩ নভে, ২০২৫

জাতীয় নির্বাচনের দিনেই গণভোট: প্রধান উপদেষ্টা

জাতীয় নির্বাচনের দিনেই গণভোট: প্রধান উপদেষ্টা

ছবি: সংগৃহীত 

জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট একই দিনে অনুষ্ঠিত হবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। আজ বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) জাতির উদ্দেশ ভাষণে তিনি এ ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, এতে সংস্কারের লক্ষ্য কোনোভাবেই বাধাগ্রস্ত হবে না। শিগগিরই জুলাই সনদ গেজেট আকারে প্রকাশ করা হবে বলেও জানান তিনি।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন গণভোটের আয়োজন করা হবে। অর্থাৎ জাতীয় নির্বাচনের মতো গণভোট ফেব্রুয়ারি প্রথমার্ধে একই দিনে অনুষ্ঠিত হবে। এতে সংস্কারের লক্ষ্য কোনোভাবে বাধাগ্রস্ত হবে না। নির্বাচন আরো উৎসবমুখর ও সাশ্রয়ী হবে। গণভোট অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে উপযুক্ত সময়ে প্রয়োজনীয় আইন প্রণয়ন করা হবে।

এর আগে জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন আদেশে স্বাক্ষর করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। আজ এ স্বাক্ষর করেন তিনি। এর আগে প্রধান উপদেষ্টার সভাপতিত্বে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে তার কার্যালয়ে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা হয়।

গত ২৮ অক্টোবার জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে দুটি বিকল্প সুপারিশ জমা দেয় জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। জানা গেছে, রাষ্ট্রপতি যে আদেশে স্বাক্ষর করেছেন তার ভিত্তিতে গণভোট হবে।

এর আগে গত ৫ আগস্ট জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস উপলক্ষে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিয়েছিলেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ওইদিন জাতীয় সংসদ ভবনের সামনে জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবসের অনুষ্ঠানে জুলাই ঘোষণাপত্র পাঠ করেন প্রধান উপদেষ্টা।

১০ নভে, ২০২৫

যে কারণে ঝুলে গেল নতুন পে স্কেল

যে কারণে ঝুলে গেল নতুন পে স্কেল


ছবি: সংগৃহীত 

সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য নতুন বেতন কাঠামো চূড়ান্ত করতে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি নিচ্ছিল পে কমিশন। তবে শেষ পর্যন্ত বিষয়টি অনিশ্চয়তায় পড়েছে। রবিবার (৯ নভেম্বর) অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ জানান, নতুন পে কমিশন নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে পরবর্তী সরকার।

অথচ কমিশন গঠনের শুরুতে তিনি বলেছিলেন— আগামী বছরের প্রথম প্রান্তিকেই বর্তমান সরকার নতুন বেতন স্কেল কার্যকর করবে। এই বক্তব্যে সরকারি চাকরিজীবীদের মধ্যে হতাশা দেখা দিয়েছে। অনেকেই মনে করছেন, বর্তমান সরকারেরই উচিত ছিল বিষয়টি নিষ্পত্তি করা। এর আগে ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে নতুন স্কেল ঘোষণার দাবি জানিয়ে আল্টিমেটামও দিয়েছিলেন তারা। এখন পুনরায় কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা শুরু করেছেন সংশ্লিষ্ট সংগঠনগুলো।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সাহাদাত হোসেন সিদ্দিকী মনে করেন, সরকারের আর্থিক সক্ষমতার ঘাটতির কারণেই এই সিদ্ধান্ত পিছিয়ে দেওয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, “অষ্টম পে কমিশনের পর নবম কমিশন পেতে ১১ বছর লেগেছে। এর মধ্যে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি অব্যাহত ছিল, গত চার বছর তো আরও বেশি। ফলে নতুন বেতন কাঠামো এখন সময়ের দাবি।”

তিনি আরও বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি সাধারণ কর্মচারীদের অনেক প্রত্যাশা ছিল। তারা ভেবেছিলেন, এই সরকার অর্থনীতিকে স্থিতিশীল করবে। কিন্তু পে–স্কেল পরবর্তী সরকারের হাতে তুলে দেওয়াই প্রমাণ করে, তারা তা পারেনি।

অধ্যাপক সিদ্দিকী আরও জানান, দেশের বাজেট ঘাটতি বাড়ছে, আর্থিক ব্যবস্থাও চাপে রয়েছে। “কমিশন গঠনের সময় বলা হয়েছিল, এই সরকারই নতুন স্কেল দেবে। কিন্তু তহবিল সংকটের কারণে তা সম্ভব হয়নি।”

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আইনুল ইসলাম বলেন, সরকারের রাজস্ব আয় এখন ব্যয়ের তুলনায় অনেক কম। ঋণের সুদ পরিশোধ ও বিভিন্ন প্রকল্পে ব্যয় বাড়ায় অর্থনীতি ভারসাম্য হারাচ্ছে।

তিনি বলেন, “এই অবস্থায় ৮০ থেকে ১০০ শতাংশ পর্যন্ত বেতন বাড়ানো সম্ভব নয়। এমনকি ভবিষ্যৎ সরকারও অর্থনৈতিক কাঠামো না বদলালে তেমন বৃদ্ধি দিতে পারবে না। দেশ এখন নির্বাচনী সময় পার করছে— ভোট আয়োজন এবং গণভোট প্রক্রিয়া নিয়েও সরকারের বড় অঙ্কের ব্যয় নির্ধারিত আছে। সব মিলিয়ে বর্তমান প্রশাসন সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য নতুন বেতন কাঠামো ঘোষণা থেকে সরে এসেছে,”।

৯ নভে, ২০২৫

শিক্ষকদের যৌক্তিক দাবি মেনে নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন গোলাম পরওয়ার।

শিক্ষকদের যৌক্তিক দাবি মেনে নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন গোলাম পরওয়ার।

ছবিঃ সংগৃহীত 
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার আজ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের যৌক্তিক দাবি মেনে নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে চলমান সংকট সমাধানের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। আজ এক বিবৃতিতে তিনি শিক্ষকদের বেতন স্কেল ১০ম গ্রেডে উন্নীতকরণসহ তিন দফা দাবি আদায়ের জন্য বিক্ষোভরত শিক্ষকদের বিরুদ্ধে পুলিশি ব্যবস্থা গ্রহণের খবরে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন।

পরওয়ার বলেন, “সরকারের দায়িত্ব প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের তিন দফা দাবি সহানুভূতির সাথে বিবেচনা করা এবং চলমান আন্দোলনের অবসান ঘটানোর জন্য যৌক্তিক ভিত্তিতে তা গ্রহণ করা,”। শিক্ষকদের অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতির ঘোষণায় তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, এটি শিক্ষার্থী, অভিভাবক এবং সমগ্র জাতির মধ্যে উদ্বেগ তৈরি করেছে।

তিনি আরও বলেন, “বার্ষিক পরীক্ষা শুরু হতে চলেছে। এই সময়ে যদি শিক্ষা ব্যবস্থা স্থবির হয়ে পড়ে, তাহলে কোমল হৃদয়ের শিক্ষার্থীরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। শিক্ষার ক্ষতি যেকোনো জাতির জন্য একটি অপূরণীয় ক্ষতি, এবং এই বিষয়টি সম্মানিত শিক্ষকদেরও বিবেচনায় নেওয়া উচিত,” ।

সরকারকে কঠোর অবস্থান থেকে সরে আসার আহ্বান জানিয়ে পারওয়ার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের তিন দফা দাবি সংলাপ এবং সহানুভূতির মাধ্যমে সমাধানের আহ্বান জানান। তিনি শিক্ষকদের আন্দোলন বন্ধ করে তাদের শ্রেণীকক্ষে ফিরিয়ে আনার জন্য অবিলম্বে ব্যবস্থা নেওয়ারও আহ্বান জানান।
 চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে ১৮ নভেম্বর

চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে ১৮ নভেম্বর

ছবিঃ সংগৃহীত 

নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ আজ বলেছেন,  চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে এবং ১৮ নভেম্বর প্রবাসী ভোটার নিবন্ধন অ্যাপ চালু করা হবে। 

“আগে, আমরা ১৬ নভেম্বর প্রবাসী ভোটার নিবন্ধন অ্যাপ চালু করতে চেয়েছিলাম। এখন ১৬ নভেম্বরের পরিবর্তে, আমরা ১৮ নভেম্বর এই অ্যাপ (পোস্টাল ভোট বিডি) চালু করব। আমরা ১৮ নভেম্বর চূড়ান্ত ভোটার তালিকাও প্রকাশ করব,” তিনি নগরীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে তার কার্যালয়ে সাংবাদিকদের বলেন।

নির্বাচন কমিশন ভবনের সামনে আম জনতা পার্টির সদস্য সচিব তারেক রহমানের অনশন সম্পর্কে আখতার আহমেদ বলেন, “আইনগতভাবে আমরা একটি চিঠির মাধ্যমে বলেছি। এখন তারা আপিল করতে পারেন এবং ঘাটতি পূরণ করতে পারেন। আপিল বা সংশোধন বা পরিবর্তন, সময় বৃদ্ধি, এগুলো একটি সাধারণ বিষয়। তাই তারা অবশ্যই এটি বিবেচনা করবেন এবং আমি তাদের কাছে আন্তরিকভাবে আবেদন করছি এই অনশন ভাঙ্গতে।”

তিনি বলেন, তারা চাইলে সিনিয়র সচিব বা কমিশনের সচিবের কাছে আপিল করতে পারেন। তারা পুনর্বিবেচনা, সংশোধন, বাদ দেওয়ার জন্য আবেদন করতে পারেন। যদি তারা আবেদন করেন, কমিশন তা বিবেচনা করবে কিনা তা ভিন্ন বিষয়,” তিনি আরও বলেন।

রাজনৈতিক দলগুলির সাথে নির্বাচনী সংলাপ সম্পর্কে তিনি বলেন, “আমরা সংলাপের জন্য অপেক্ষা করছি এবং প্রার্থী এবং রাজনৈতিক দলগুলির জন্য আচরণবিধির গেজেট পাওয়ার পরে সংলাপের সময় নির্ধারণ করব।”

৫ মামলায় হাইকোর্টে আইভীর জামিন

৫ মামলায় হাইকোর্টে আইভীর জামিন

ছবি: সংগৃহীত 

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ঘটনায় হত্যাসহ পৃথক পাঁচ মামলায় নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভীকে জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট। তার জামিন প্রশ্নে রুল যথাযথ ঘোষণা করে রোববার (৯ নভেম্বর) বিচারপতি এ এস এম আবদুল মোবিন ও বিচারপতি মো. সগীর হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।

আদালতে জামিন আবেদনের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সারা হোসেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সুলতানা আক্তার রুবী। এর মধ্যে তিনটি হত্যা মামলা ও বাকী দুটি হত্যাচেষ্টা মামলা।

গত ৯ মে ভোর রাত ৩টার দিকে শহরের দেওভোগ এলাকায় অবস্থিত চুনকা কুটির থেকে আইভীকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর বিভিন্ন মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

৮ নভে, ২০২৫

সাপের কামড়ের অ্যান্টিভেনম সব উপজেলায় পাঠানোর নির্দেশ হাইকোর্টের

সাপের কামড়ের অ্যান্টিভেনম সব উপজেলায় পাঠানোর নির্দেশ হাইকোর্টের

ছবি: সংগৃহীত 

সাপের কামড়ের প্রতিষেধক অ্যান্টিভেনম দেশের সব উপজেলা পর্যায়ের সরকারি হাসপাতালে পর্যাপ্ত পরিমাণে সরবরাহ নিশ্চিত করার জন্য ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর সিভিল সার্জনদের নির্দেশনা দিয়েছে। এছাড়াও প্রতিটি উপজেলা সদরের কমপক্ষে দুটি ফার্মেসিতে সাপের কামড়ের অ্যান্টিভেনম মজুত রাখতে বলা হয়েছে। শনিবার (৮ নভেম্বর) রিটকারী আইনজীবী অ্যাডভোকেট মীর এ কে এম নুরন্নবী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এই নির্দেশনাটি গত বৃহস্পতিবার বিচারপতি ফাহমিদা কাদেরের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চে ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের দাখিল করা এক প্রতিবেদনে জানানো হয়। গত ১৭ আগস্ট হাইকোর্ট উপজেলা পর্যায়ের সরকারি হাসপাতালে পর্যাপ্ত পরিমাণে অ্যান্টিভেনম সরবরাহের নির্দেশ দিয়েছিলেন। এই নির্দেশ স্বাস্থ্যসচিব, ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালকসহ সংশ্লিষ্টদের বাস্তবায়ন করতে বলা হয়।

জনস্বার্থে দায়ের করা এই রিটের প্রাথমিক শুনানি হয়েছিল ১৮ আগস্ট, যার রিটকারী আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট মীর এ কে এম নুরন্নবী। তাকে সহযোগিতা করেন অ্যাডভোকেট ইসমাঈল হোসেন। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শফিকুর রহমান ও তানিম খান এবং সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল ইকরামুল কবির।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে ১ জুলাই পর্যন্ত সাপের কামড়ে ৩৮ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং এই পাঁচ মাসে ৬১০ জন সাপের দংশনের শিকার হয়েছেন। সাম্প্রতি বাংলাদেশে এই বিষধর সাপটি নিয়ে আতঙ্ক বিরাজ করছে এবং এটি ২৭টি জেলায় ছড়িয়ে পড়েছে।এটি ভাইপারিড গ্রুপের একটি বিষাক্ত সাপ। ২০২২ সালে পরিচালিত জাতীয় জরিপ অনুযায়ী, বাংলাদেশে প্রতি বছর চার লাখের বেশি মানুষ সাপের দংশনের শিকার হন এবং দুঃখজনকভাবে প্রায় সাড়ে সাত হাজার মানুষ মৃত্যুবরণ করেন।

ডা. রোবেদ আমিন জানান, বিষধর সর্পদংশনের স্বীকৃত চিকিৎসা হচ্ছে অ্যান্টিভেনম। দেশের প্রধান বিষধর সাপের বিষ সংগ্রহ করে তা ঘোড়ার শরীরে প্রয়োগ করা, ঘোড়ার রক্তের সিরাম থেকে বিভিন্ন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে অ্যান্টিভেনম তৈরি করা হয়। বাংলাদেশে বর্তমানে অ্যান্টিভেনম তৈরি করা হয় না। ভারতে তৈরি (৪টি প্রধান বিষধর সাপের বিরুদ্ধে প্রস্তুত) অ্যান্টিভেনম সংগ্রহ করে অসংক্রামক ব্যধি কর্মসূচি বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে সরবারহ করা হয়ে থাকে। অ্যান্টিভেনম ক্রয়, বিতরণ, সংরক্ষণ, ব্যবহার, ব্যবহার পরবর্তী প্রভাব (নজরদারি) দেখার বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কমসূচি না থাকা সত্ত্বেও অ্যান্টিভেনম প্রয়োগের সুফল লক্ষ্যণীয়।

এই নির্দেশনা বাস্তবায়নের মাধ্যমে তৃণমূল পর্যায়ে সাপে কাটা রোগীদের দ্রুত চিকিৎসা প্রাপ্তি সহজ হবে বলে আশা করা যায়, যা সর্পদংশনে মৃত্যুর হার কমাতে সহায়ক হতে পারে।

'দেশ ছাড়ার সিদ্ধান্ত সহজ ছিল না': ভারতীয় মিডিয়ায় শেখ হাসিনা

'দেশ ছাড়ার সিদ্ধান্ত সহজ ছিল না': ভারতীয় মিডিয়ায় শেখ হাসিনা

ছবি: সংগৃহীত 

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের সময় দেশ ছাড়ার সিদ্ধান্ত সহজ ছিল না বলে মন্তব্য করেছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, ‘এটা জরুরি প্রয়োজনে নিতে হয়েছিল। যদি আমি সেখানে থাকতাম, তাহলে শুধু আমার নয়, চারপাশের সবার জীবন বিপদে পড়ত।’ গতকাল ভারতীয় দৈনিক ‘দ্য হিন্দু’কে এক সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন।

একই দিন ভারতীয় দৈনিক ‘দ্য নিউ ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস’ এবং ‘হিন্দুস্তান টাইমসে’ সাক্ষাৎকার এবং সাপ্তাহিক ম্যাগাজিন ‘দ্য উইক’-এ তাঁর নামে নিবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে। সাক্ষাৎকার তিনটি ইমেইলে নেওয়া। এসব সাক্ষাৎকার ও নিবন্ধে তিনি আন্দোলনের সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ভূমিকা, তাঁর শাসনামলে অর্থ পাচার, অন্তর্বর্তী সরকারের ভূমিকা, আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ, জুলাই সনদ, সংবিধান সংস্কার, গণভোট, বিএনপি ও উগ্রপন্থার উত্থান বিষয়ে খোলাখুলি কথা বলেছেন।

শেখ হাসিনার কাছে দ্য হিন্দুর প্রশ্ন ছিল, দেশ ছাড়ার আগে আপনি কি পদত্যাগ করেছিলেন? যদি করে থাকেন, তাহলে ঢাকায় কারও কাছে কি আপনার পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছিলেন? বিস্তারিত বলবেন কি?
উত্তরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি পদত্যাগ করিনি। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে পদত্যাগ করতে হলে রাষ্ট্রপতি বরাবর চিঠি জমা দিতে হয়। আমি কখনোই এমন কোনো চিঠিতে সই করিনি, বা রাষ্ট্রপতিও তা গ্রহণ করেননি।’

এই প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা আরও বলেছেন, ‘ঢাকা ত্যাগ করাটা আমার কাছে সহজ কোনো সিদ্ধান্ত ছিল না। বরং এটা ছিল জরুরি প্রয়োজনে নেওয়া। স্পষ্ট হয়েছিল, যদি আমি সেখানে থাকি, তবে শুধু আমার নয়, চারপাশের সবার জীবন বিপদে পড়বে। নিরাপত্তার পরিবেশ ক্রমেই অসহনীয় হয়ে উঠছিল। আমার, পরিবার, বন্ধু ও সহকর্মীদের জীবনের ওপর হুমকি ছিল।’

হিন্দুস্তান টাইমসের প্রশ্ন ছিল, ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আপনার সরাসরি ভূমিকা ছিল বলে অন্তর্বর্তী সরকার অভিযোগ এনেছে। জাতিসংঘ বলেছে, এই বিক্ষোভে প্রায় এক হাজার ৪০০ মানুষ নিহত হয়েছে। এই অভিযোগগুলোর জবাবে আপনি কী বলবেন?

এর উত্তরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘অভিযোগ করা হয়েছে, এই প্রাণহানির সঙ্গে যুক্ত নিরাপত্তা পদক্ষেপ ছিল আমার– এর কোনো ভিত্তি নেই। অভিযোগগুলোর উদ্দেশ্য প্রতিপক্ষের মুখ বন্ধ করা। মাঠ পর্যায়ে নিরাপত্তা বাহিনীর পদক্ষেপকে সরকারের সরাসরি নির্দেশ হিসেবে চিহ্নিত করাটা ভুল। সহিংসতা মোকাবিলার ক্ষেত্রে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কিছু সদস্যের ভুল ছিল। তবে আমি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে প্রতি মুহূর্তের কৌশলগত পদক্ষেপে নির্দেশ দিচ্ছিলাম– এ ধারণাটি নিরাপত্তা বাহিনী কীভাবে কাজ করে, তা বুঝতে মৌলিকভাবে ভুল করা। আমি আবারও বলছি, কোনো অবস্থাতেই আমি নিরাপত্তা বাহিনীকে ছাত্র-জনতার ওপর গুলি চালানোর অনুমতি দিইনি।’

দ্য উইকের নিবন্ধে শেখ হাসিনা দেশে ‘গণতন্ত্রের অভাব রয়েছে’ বলে অভিযোগ করেছেন। তিনি লিখেছেন, বাংলাদেশে ‘অভিজাত শ্রেণি’র শাসন চলছে।

হিন্দুস্তান টাইমসের সাক্ষাৎকারে চরমপন্থার উত্থান নিয়ে কথা বলেছেন। তাঁর মতে, বর্তমান সরকারের নীতির কারণে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কে টানাপোড়েন চলছে। আসন্ন নির্বাচন নিয়ে তিনি সতর্ক করেছেন, আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করে ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে যে নির্বাচন করার কথা ভাবা হচ্ছে, তা বৈধতা পাবে না।

ভারতের মাটিতে আশ্রয় নিয়ে হিন্দুস্তান টাইমসে সাক্ষাৎকারে তিনি নয়াদিল্লির প্রতি তাঁর অবস্থান স্পষ্ট করেছেন। তিনি ভারতীয় জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। দ্য হিন্দুতে বিএনপির সঙ্গে কোনো গোপন বোঝাপড়ার সম্ভাবনা তিনি উড়িয়ে দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগের মতোই বিএনপিও একটি প্রতিষ্ঠিত রাজনৈতিক দল। তারা বর্তমান সরকারের অসংগতিগুলো তুলে ধরছে।’

‘দ্য নিউ ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসে’র প্রশ্ন ছিল– সম্প্রতি ফিন্যান্সিয়াল টাইমসের এক প্রতিবেদনে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসকে উদ্ধৃত করে বলা হয়েছে, আপনার ১৫ বছরের শাসনামলে বাংলাদেশ থেকে প্রায় ২৩ হাজার ৪০০ কোটি ডলার লুট হয়েছে। সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী এবং এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল আলম বিদেশে অর্থ পাচারে সহায়তা করেছেন। দুর্নীতি দমন কমিশন অভিযোগ করেছে, আপনি পরিবার বা নেতাদের সুবিধা দিতে বেআইনিভাবে সরকারি জমি বরাদ্দ দিয়েছেন। এখন আপনার, ছেলে এবং মেয়ের বিরুদ্ধে আদালতের বিচার চলছে। নিজের, পরিবার এবং রাজনৈতিক সহকর্মীদের বিরুদ্ধে এই দুর্নীতির অভিযোগগুলোর জবাবে কী বলবেন?

জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এই অভিযোগগুলো সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষরা এগুলো তৈরি করেছে। আমি অস্বীকার করছি না যে দুর্নীতি ছিল না, তবে কেউ প্রমাণ করতে পারেনি যে আমার পরিবার ও সহযোগীরা রাষ্ট্রীয় সম্পদ থেকে ব্যক্তিগতভাবে লাভবান হয়েছেন বা রাষ্ট্রীয় দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন।’

শেখ হাসিনা আরও বলেন, ‘২৩ হাজার ৪০০ কোটি ডলারের কথা ভিত্তিহীন এবং হাস্যকর। এত বড় অঙ্কের চুরি করা সম্ভব নয়। যদি এমনটি ঘটত, তবে আমাদের অর্থনীতি ধসে পড়ত। অভিযোগকারীরা তথ্যের চেয়ে কাল্পনিক অভিযোগকে বেশি পছন্দ করেন।’