দায়মুক্তি’ আইন নামে পরিচিত বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের করা ‘বিদ্যুৎ ও জ্বালানীর দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) আইন, ২০১০ -এর দুটি ধারার বৈধতা প্রশ্নে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি একেএম রবিউল হাসানের বেঞ্চ চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে সরকারকে নির্দেশ দেন।
বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) আইনটি পাশ করা হয় ২০১০ সালের ১২ অক্টোবর। জরুরি ভিত্তিতে বিদ্যুতের উৎপাদন ও সরবরাহ বাড়াতে দরপত্র ছাড়াই প্রকল্প নেওয়ার সুযোগ রাখা হয় আইনে। এছাড়া এ আইনের আওতায় নেওয়া কোনো সিদ্ধান্ত আদালতে চ্যালেঞ্জ করা যাবে না। তাই এটি ‘দায়মুক্তি’ আইন নামে পরিচিতি পায়।
এ বিষয়ে আইন, অর্থ ও বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব, পেট্রোবাংলা ও বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যানদের কাছে জবাব চেয়েছেন আদালত।
২৮ আগস্ট সিনিয়র আইনজীবী শাহদীন মালিক এবং তার জুনিয়র সহকর্মী তায়েব-উল-ইসলাম শোরভের জনস্বার্থে দায়ের করা একটি রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এই রুল জারি করা হয়। আবেদনকারীরা বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) আইন ২০১০ এর ধারা ৬(২) এবং ৯ এর সাংবিধানিক বৈধতাকে বিশেষভাবে চ্যালেঞ্জ করেছে।
এ দুটি ধারা ধারাকে সংবিধানের ৭, ২১, ২৬, ২৭, ৩১, ৪২, ৪৪, ৪৬, ১৪৩ ও ১৪৫ অনুচ্ছেদের লঙ্ঘন বলে উল্লেখ করা হয় রিটে। আইনজীবী শাহদীন মালিক নিজেই রিটের পক্ষে শুনানি করেন।
আইনের ৬(২) ধারায় বলা আছে- ‘উপ-ধারা (১) এ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, বিদ্যুৎ, জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত মন্ত্রীর সম্মতি গ্রহণক্রমে যে কোনো ক্রয়, বিনিয়োগ পরিকল্পনা বা প্রস্তাব ধারা ৫ এ বর্ণিত প্রক্রিয়াকরণ কমিটি সীমিত সংখ্যক অথবা একক কোনো প্রতিষ্ঠানের সহিত যোগাযোগ ও দরকষাকষির মাধ্যমে উক্ত কাজের জন্য মনোনীত করিয়া ধারা ৭ এ বর্ণিত পদ্ধতি অনুসরণে অর্থনৈতিক বিষয় বা সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটিতে প্রেরণের পদক্ষেপ গ্রহণ করিবে।’
আর ৯ ধারায় বলা হয়েছে, ‘এই আইনের অধীন কৃত, বা কৃত বলিয়া বিবেচিত কোনো কার্য, গৃহীত কোনো ব্যবস্থা, প্রদত্ত কোনো আদেশ বা নির্দেশের বৈধতা সম্পর্কে কোনো আদালতের নিকট প্রশ্ন উত্থাপন করা যাইবে না।
আইনজীবী শাহদীন মালিক সাংবাদিকদের বলেন, ‘কোনো সভ্য রাষ্ট্রের কোনো আইনে মন্ত্রীর এমন একক ক্ষমতা থাকতে পারে না। আদালতের এখতিয়ার রদ করতে পারে এমন কোনো আইন হতে পারে না। যেহেতু এই মামলায় (রিট আবেদনে) আইনকে চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে, তাই আদালত অন্তর্বর্তী আদেশ না দিয়ে চার সপ্তাহের রুল দিয়েছেন।’
0 coment rios: