বাংলাদেশ সরকার বৃহস্পতিবার শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় ১৬ জুলাই থেকে ২১ জুলাই পর্যন্ত সংঘটিত সব হত্যাকাণ্ড ও সহিংসতার তদন্তের জন্য বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশনের পরিধি ও এখতিয়ার প্রশস্ত করেছে। বৃহস্পতিবার জারি করা মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের গেজেট অনুসারে কমিশনের সদস্যদের সংখ্যা এক থেকে বাড়িয়ে তিন করা হয়েছে এবং তদন্ত শেষ করার পর ৪৫ কার্যদিবসের মধ্যে সরকারের কাছে রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ গত ১৬ জুলাই কোটাবিরোধী আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের হত্যার তদন্তে বিচারপতি খন্দকার দিলীরুজ্জামানের নেতৃত্বে এক সদস্যের বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশন গঠনের ঘোষণা দিয়ে ১৮ জুলাইয়ের গেজেট বাতিল করে নতুন গেজেট জারি করে।
নতুন গেজেট অনুযায়ী, বিচারপতি দিলীরুজ্জামানকে কমিশনের চেয়ারম্যান করা হয়েছে এবং বিচারপতি কে এম জাহিদ সারওয়ার ও বিচারপতি মোহাম্মদ শওকত আলী চৌধুরীকে সদস্য করা হয়েছে। গত ১ আগস্ট পর্যন্ত সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভে অন্তত ২১৪ জন নিহত হয়েছেন।
২৮ জুলাই, সরকার প্রকাশ করে যে সহিংসতায় সারাদেশে সাধারণ মানুষ, ছাত্র, পুলিশ, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ কর্মীসহ ১৪৭ জন নিহত হয়েছেন। মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোঃ মাহবুব হোসেন ২৯ জুলাই জানান, সরকারিভাবে মৃতের সংখ্যা ১৫০-এ পৌঁছেছে।
কমিশনের টার্ম অব রেফারেন্সের মধ্যে রয়েছে '১৬ জুলাই থেকে ২১ জুলাই পর্যন্ত যারা নিহত হয়েছেন তাদের মৃত্যুর কারণ খুঁজে বের করা এবং মৃত্যুর জন্য দায়ীদের খুঁজে বের করা। কমিশনের টার্ম অব রেফারেন্সে ১৬-২১ জুলাই সহিংসতা, নাশকতা, অগ্নিসংযোগ, লুটপাট এবং অন্যান্য অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করাও অন্তর্ভুক্ত ছিল।
একই সময়ে বিভিন্ন সরকারি, আধা-সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের অবকাঠামোর ক্ষয়ক্ষতির মাধ্যমে ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণের দায়িত্বও কমিশনকে দেওয়া হয়েছে। কমিশনের চেয়ারম্যান খন্দকার দিলীরুজ্জামান পরে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে বলেন, আন্দোলন চলাকালে ১৬ জুলাই বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আবু সাঈদকে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে হত্যার ঘটনায় কমিশন ৫ আগস্ট সাক্ষীদের জবানবন্দি রেকর্ড করবে।
আগামী ৬ আগস্ট রংপুরে সাজ্জাদ হোসেন, মোসলেমউদ্দিন মিলন ও মানিক মিয়া হত্যাকাণ্ডে সাক্ষীদের জবানবন্দি রেকর্ড করার কথা রয়েছে কমিশনের। জেলায় মিরাজুল ইসলাম ও আবদুল্লাহ আল তাহের হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সাক্ষীদের জবানবন্দি রেকর্ড করার জন্য ৭ আগস্ট দিন ধার্য করা হয়েছে। কমিশন তিন কার্যদিবসের প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে সব সাক্ষীকে রংপুর সার্কিট হাউসে হাজির হওয়ার জন্য তাদের সাক্ষ্য-প্রমাণ উপস্থাপনের জন্য অনুরোধ করেছে।
0 coment rios: