শনিবার, ২৭ জুলাই, ২০২৪

কোটা সংস্কার আন্দোলন: হাসপাতাল থেকে নাহিদ, আসিফ ও বাকেরকে তুলে নেওয়ার অভিযোগ

বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম ও আসিফ মাহমুদকে ঢাকার একটি হাসপাতাল থেকে সাদা পোশাকের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তুলে নিয়ে গেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

নাহিদ ইসলামের বাবা বদরুল আলম ও একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী ঢাকা ট্রিবিউনকে জানান, শুক্রবার বিকেল ৪টার দিকে রাজধানীর গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতাল থেকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কয়েকজন সাদা পোশাকের ব্যক্তি দুজনকে তুলে নিয়ে যায়।

  “দেশের আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সাদা পোশাকের কিছু লোক তাদের হাসপাতাল থেকে তুলে নিয়ে গেছে।  সকাল থেকে হাসপাতালটি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী দ্বারা ব্যারিকেড করা হয়েছে,” বদরুল আলম বলেন। এছাড়া, হাসপাতালের একাধিক চিকিৎসক ও নার্স জানিয়েছেন, আন্দোলনের দুই সমন্বয়কারী গত কয়েকদিন ধরে গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।

নাহিদের বোন ফাতেমা তসলিম গণমাধ্যমকে জানান, নাহিদ ও আসিফ অসুস্থ থাকা অবস্থায় তাদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তুলে নিয়ে যায়।  তাদের কেড়ে নেওয়ার সময় তারা কাঁপছিল এবং সেই সময়ে তাদের ট্রাউজার পরতে দেওয়া হয়নি, তিনি বলেন।

নাহিদ ইসলাম ও আসিফ মাহমুদ এর আগে তাদের অপহরণ ও নির্যাতনের অভিযোগ করেন। গত ২১ জুলাই অপহরণ করে চোখ বেঁধে রাখা হয়েছিল বলে দাবি করেন নাহিদ ইসলাম। তিনি আমাদের প্রতিবেদককে বলেন, তাকে শারীরিক ও মানসিকভাবে মারাত্মকভাবে নির্যাতন করা হয়েছিল। 

অন্যদিকে, আসিফ মাহমুদ দাবি করেছেন যে তাকে ১৯ জুলাই অপহরণ করা হয়েছিল এবং ২৪ জুলাই মুক্তি না হওয়া পর্যন্ত চার দিন জিজ্ঞাসাবাদের অধীনে বন্দী রাখা হয়েছিল। 

তিনি যতবার আন্দোলন বন্ধ করতে অস্বীকার করেছেন ততবার ইনজেকশন দিয়ে অজ্ঞান হয়ে যাওয়ার কথা জানিয়েছেন।  কোন বিশেষ আইন প্রয়োগকারী সংস্থা তাদের অপহরণ করেছে তা তাদের কেউ শনাক্ত করতে পারেনি। 

এদিকে কোটা আন্দোলনকারীদের একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে বৃহস্পতিবার দিনগত রাত পৌনে ৪টার দিকে একটি খুদে বার্তায় গণস্বাস্থ্য হাসপাতাল ও তাদের চিকিৎসাধীন ওয়ার্ডের সামনে ডিবি পুলিশের অবস্থান নেওয়ার কথা জানান। 

আসিফ মাহমুদের দেওয়া ওই বর্তায় বলা হয়, গণস্বাস্থ্য হাসপাতালে ভর্তি অবস্থায় আমাকে (আসিফ), নাহিদ ভাই আর বাকেরকে গৃহবন্দি করেছে ডিবি পলিশ। ওয়ার্ডের সামনে ও হাসপাতালে ডিবি পুলিশ অবস্থান নিয়েছে। 
এছাড়া হাসপাতালের সামনে পুলিশ, বিজিবি ও র‌্যাব মোতায়েন করে রাখা হয়েছে। আমাদের সব ধরনের কমিউনিকেশন বন্ধ করে রাকা হয়েছে। চিকিৎসা নিতে এসেও বিড়ম্বনার শিকার হতে হচ্ছে।

এদিকে, তাদের তুলে নেওয়ার বিষয়ে জানতে ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) হারুন অর রশীদকে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি। এছাড়া ডিবির আরও কয়েকজন কর্মকর্তাকে কল করা হলেও তারা তুলে নেওয়ার বিষয়টি জানেন না বলে গনমাধ্যম কর্মীদেরকে জানিয়েছেন।
 


শেয়ার করুন

0 coment rios: