৬ সেপ, ২০২৫

১০ লাখ টাকা নিয়ে আ. লীগ নেতার জামিন করালেন পিপি ও বিএনপি নেতা জালাল

কিশোরগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) এবং পাকুন্দিয়া উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট মো. জালাল উদ্দিনের বিরুদ্ধে ১০ লাখ টাকা লেনদেনের অভিযোগ উঠেছে।

শুক্রবার (৫ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় পাকুন্দিয়ায় এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন হাজী মকবুল হোসেনের শ্যালক জাহাঙ্গীর আলম সম্রাট। হাজী মকবুল উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য।

জাহাঙ্গীর আলম সম্রাট জানান, ৫ আগস্ট গ্রেপ্তারের পর হাজী মকবুলের জামিনের জন্য তিনি পিপি জালাল উদ্দিনের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। জালাল উদ্দিন আশ্বস্ত করার পর টাকার প্রসঙ্গ তোলা হয়। এরপর তিন ধাপে মোট ১০ লাখ টাকা পরিশোধ করেন তিনি। তবে নিম্ন আদালতে জামিন না হলেও শেষ পর্যন্ত জালালের সহায়তায় উচ্চ আদালত থেকে জামিন পান হাজী মকবুল।

এদিকে, কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ভিপি কামাল উদ্দিন অভিযোগ করে বলেছেন, উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট জালাল উদ্দিন জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলির (পিপি) দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে টাকার বিনিময়ে একের পর এক আওয়ামী লীগ নেতা জামিন পাচ্ছেন। এমনকি পাকুন্দিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য হাজি মকবুল হোসেনকে জামিন করাতে ১০ লাখ টাকা লেনদেন হয়েছে বলেও তিনি দাবি করেন।

তিনি আরও অভিযোগ করেন, ‘ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় জালাল উদ্দিনের কোনো ভূমিকা ছিল না। কিছুদিন আগে তিনি মির্জা আব্বাস সাহেবের কাছে বলেন, পাকুন্দিয়ার এসিল্যান্ডকে সরাতে হবে। সে ফ্যাসিবাদের দোসর। অথচ যেদিন এসিল্যান্ডের মাথা ফেটে যায়, তখন তিনি পুলিশকে বলেন—কামাল তার লোকজন দিয়ে এই কাজ করিয়েছে। কিন্তু বাস্তবতা হলো, মির্জা আব্বাস সাহেবের সঙ্গে কথা বলার এক সপ্তাহ আগেই ওই এসিল্যান্ড পাকুন্দিয়া থেকে চলে গিয়েছিলেন।’

ভিপি কামাল উদ্দিন বলেন, ‘এখন তিনি আবার বলছেন, ইউএনও নাকি ফ্যাসিবাদের দোসর। শেখ হাসিনা ক্ষমতা হারিয়ে পালানোর এক বছর পর এসে কেন এসব কথা বলা হচ্ছে? গত এক বছরে তো এমন কোনো কথা বলেননি। আসলে এখন স্বার্থের টান পড়েছে, তাই ইউএনওকে নিয়ে এ ধরনের বক্তব্য দিচ্ছেন।’

অনুষ্ঠানে পাকুন্দিয়ায় উপজেলা যুবদলের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক ফজলুর রহমানের সভাপতিত্বে এসময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আবদুল কদ্দুছ মোমেন, সদস্য রেজাউল করিম বজলু, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান বজলুল করিম বাবুল, উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক আমিনুল হক জর্জ, উপজেলা শ্রমিকদলের সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম প্রমুখ।

টাকার বিনিময়ে আওয়ামী লীগের নেতার জামিন করাচ্ছেন—এমন অভিযোগের বিষয়ে অ্যাডভোকেট জালাল উদ্দিন বলেন, ‘যারা জামিনে বের হয়েছেন, তারা সবাই হাইকোর্ট থেকে জামিন পেয়েছেন। আওয়ামী লীগ নেতা মকবুলও হাইকোর্ট থেকে জামিন পেয়েছেন। মিথ্যা কথা বলে অভিযোগ করলেই তো হবে না।’



শেয়ার করুন

0 coment rios: